
মাহমুদুল হাসান,
মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের তোতারদ্বীপ এলাকায় আরাকান আর্মি (AA) ও রোহিঙ্গা বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা আর্মি (ARA)-র মধ্যে শনিবার (২৫ অক্টোবর) দু’দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সংঘর্ষের গুলিবর্ষণের রেশ গিয়ে পড়েছে বাংলাদেশের টেকনাফ সীমান্তেও। মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলিতে টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের এক নারী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
সূত্র জানায়, প্রথম দফার সংঘর্ষটি ঘটে দুপুর ১২টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় দফা বিকেল ৫টা থেকে ৫টা ৪৫ মিনিটের মধ্যে। আরাকান আর্মির কয়েকজন সদস্য একটি ট্রলারে করে তোতারদ্বীপের নিজস্ব নিয়ন্ত্রিত ক্যাম্পে ফেরার সময় এআরএ মুজাহিদরা ট্রলারটিতে হামলা চালিয়ে তা ধ্বংস করে দেয়। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় আরাকান আর্মি এআরএ সদস্যদের লক্ষ্য করে হালকা রকেট লঞ্চার (আরএল) ও বিভিন্ন ক্ষুদ্র ও মাঝারি অস্ত্র দিয়ে পাল্টা হামলা চালায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সংঘর্ষ চলাকালীন সময়ে মিয়ানমার সীমান্ত থেকে ছোড়া একটি গুলি বাংলাদেশ সীমান্তের হোয়াইক্যং ৩ নম্বর ওয়ার্ডের তেচ্ছি ব্রিজ এলাকায় এসে পড়ে। এতে স্থানীয় বাসিন্দা ছেনুয়ারা বেগম’র পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মোস্তাক আহমেদ জানান, “শনিবার বিকালে হঠাৎ মিয়ানমার সীমান্তের ওপারে তোতারদ্বীপ এলাকায় বিকট শব্দে গোলাগুলি শুরু হয়। কিছুক্ষণ পর একটি গুলি এসে আমার দোকানের টিন ছিদ্র করে ভেতরে পড়ে। তখন সবাই আতঙ্কে পড়ে যাই”।
আহত ছেনুয়ারা বেগম বলেন, “আমি বিকেলে বাড়ির উঠানে হাঁটছিলাম, হঠাৎ গুলি এসে পায়ে লাগে। তারপরই আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়ি”।
হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমেদ আনোয়ারী জানান, “মিয়ানমার সীমান্তে গোলাগুলির শব্দের পরপরই খবর পাই যে, আমাদের এলাকার ছেনুয়ারা বেগম গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে”।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহেসান উদ্দিন বলেন, “হোয়াইক্যং তেচ্ছিব্রিজ এলাকায় এক নারী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে শুনেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে”।
এদিকে, সীমান্তজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। এলাকাবাসী জরুরি ভিত্তিতে সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার ও প্রয়োজনীয় সরকারি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।