1. info@channelukhiya.com : চ্যানেল উখিয়া : চ্যানেল উখিয়া
  2. info@www.channelukhiya.com : চ্যানেল উখিয়া :
রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ০৬:৪৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
আবুল খায়ের টোব্যাকো’র ঈদগাঁও এজেন্ট আবুল হোসেন’র ব্যবসায়িক সফলতা অর্জন কক্সবাজার কারাগারে ‘মধুমাস’ উদযাপন, মৌসুমি ফল পেয়ে উচ্ছ্বসিত বন্দিরা! উখিয়ায় প্রযুক্তির ছোঁয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে চিরচেনা গরু-মহিষ,লাঙ্গল-জোয়ালের ‘হালচাষ’ উখিয়ায় প্রযুক্তির ছোঁয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে চিরচেনা গরু-মহিষ,লাঙ্গল-জোয়ালের ‘হালচাষ’ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ত্রিমুখী সংঘাত: অভ্যন্তরে প্রবেশে বাধা দিতে বসানো হচ্ছে স্থলমাইন! উখিয়ায় উপজেলা প্রশাসনের অভিযান:৪ প্রতিষ্ঠানের ২লাখ ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা বালুখালী সীমান্তে ২০ হাজার ইয়াবাসহ দুই বহনকারী আটক:মুল মালিক ছৈয়দুল হক ও নুরুল হক অধরা! কুতুপালং বাজার এখন সিসিটিভি’র আওতায়! উখিয়ার মরিচ্যা এলাকায় র‍্যাবের অভিযানে সামরিক সরঞ্জাম ও অস্ত্রসহ অন্যতম সন্ত্রাসী ফারুক গ্রেফতার নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে বিজিবির অভিযানে ৯,৬২০ পিস বার্মিজ ইয়াবা উদ্ধার

উখিয়ায় প্রযুক্তির ছোঁয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে চিরচেনা গরু-মহিষ,লাঙ্গল-জোয়ালের ‘হালচাষ’

  • প্রকাশিত: বুধবার, ২ জুলাই, ২০২৫
  • ৫ বার পড়া হয়েছে

শ.ম.গফুর,উখিয়া:

মোরগ কিংবা কাকডাকা ভোরে গরুর গলায় ঘণ্টার আওয়াজ, কাঁধে লাঙল-জোয়াল নিয়ে জমির দিকে হেঁটে যাওয়া কৃষকের দৃশ্য এক সময় ছিল বাংলার পল্লিজীবনের চিরচেনা রূপ। গরু দিয়ে হালচাষ শুধু একটি চাষাবাদ পদ্ধতি নয়, এটি ছিল গ্রামীণ কৃষকের জীবনযাত্রার অনুষঙ্গ। পূর্বপুরুষের রেখে যাওয়া ঐতিহ্যের প্রতি গভীর মমতামাখা সেসব দিন এখন কেবলই স্মৃতি। সময়ের স্রোতে হারিয়ে যেতে বসেছে বাঙালি জীবনের সাদামাটা ঐতিহ্য।
উখিয়ার কৃষিনির্ভর এলাকায় একসময় গরু দিয়ে জমি চাষ ছিল কৃষকের নিত্যসঙ্গী। কৃষকের ঘরে দুটি গরু থাকাই ছিল গর্বের বিষয়। নিজেদের জমির পাশাপাশি অন্যের জমিতে হালচাষ করে অনেকেই জীবিকা নির্বাহ করতেন।
কিন্তু প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে সাথে বদলে গেছে চাষাবাদের দৃশ্যপট। ট্রাক্টর ও পাওয়ার টিলারের ব্যবহার বেড়েছে বহুগুণ। সময় ও খরচ কম লাগায় কৃষকরাও মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন গরু দিয়ে হালচাষ থেকে। এখন এটি ব্যয়সাধ্য, সময়সাপেক্ষ ও শ্রমনির্ভর। ফলে ধীরে ধীরে গ্রামবাংলা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে এই ঐতিহ্যবাহী কৃষি পদ্ধতি।
তবুও কখনো কখনো দেখা মেলে হারিয়ে যাওয়া সময়ের চিহ্নের। সম্প্রতি সদর ইউপি’র ডিগলিয়া পালং,পালংখালীর মোছার খোলা,তেলখোলা,জালিয়া পালংয়ের মনখালী,ছেপটখালী এলাকায় দেখা যায় গরু দিয়ে হালচাষের এক ব্যতিক্রমী দৃশ্য।
কৃষক শামসুল আলম ও আবু সিদ্দিকের সাথে আলাপকালে বলেন, ‘অনেক দিন পর আমরা দু’জন জমিতে মই ও হাল দিচ্ছি । ভালোই লাগছে। আগে গরু ছাড়া হালচাষ কল্পনাই করা যেত না। এখন যন্ত্রে দ্রুত কাজ হয় ঠিকই, কিন্তু ঐতিহ্যের প্রতি মায়া থেকেই গরু দিয়ে জমি চাষ করছি।
পুরোনো দিনের টানে এখনও কেউ কেউ বাড়ির আঙিনায় রেখে দিয়েছেন লাঙল এবং মই। সেগুলো যেন এক হারিয়ে যাওয়া সময়ের নিঃশব্দ সাক্ষ্য।এক সময় উখিয়া সদর সহ প্রায় প্রতিটি বাজার ছিল কৃষিপণ্যের প্রাণকেন্দ্র। এখানে জমজমাট হাট বসতো।লাঙল, জোয়াল, মইসহ গ্রামীণ কৃষিপণ্য কেনার জন্য ভিড় করতেন কৃষকরা। আজ সে হাটও হারিয়ে গেছে, নেই সেই শব্দ, নেই প্রাণ।
উখিয়া উপজেলাতেই আধুনিক কৃষির প্রভাব স্পষ্ট। ফলন বেড়েছে, সময় বাঁচছে। তবে হারিয়ে যাচ্ছে সেই চিরচেনা দৃশ্যপট। কাঁধে লাঙল-জোয়াল ও হাতে গরুর দড়ি নিয়ে ভোরের আলোয় মাঠে যাওয়া কৃষকের নির্ভেজাল পথচলা আর চোখে পড়ে না, কানে বাজে না হৈ-হৈ শব্দে গরুকে পথ দেখিয়ে নেয়ার সেই অভিনব কায়দা। রাখালের কণ্ঠেও নেই সেই চিরচেনা রাখালিয়া গানের সুর।
কৃষিবিদদের মতে, আধুনিক প্রযুক্তির প্রসারে গরু দিয়ে হালচাষ বিলুপ্ত হতে চলেছে। এখন সহজলভ্য যন্ত্রপাতি, গরুর উচ্চমূল্য এবং গো-খাদ্যের খরচ বৃদ্ধির ফলে কৃষিকাজে কৃষকরা আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতির দিকে ঝুঁকছেন। গরুর ব্যবহারও ক্রমশ: কমে আসছে। বর্তমানে যারা গরু পালন করছেন, তারা মূলত বাণিজ্যিক খামারের উদ্দেশ্যে পালন করেন, হালচাষের জন্য নয়।
উখিয়ার ঘাট তেলীপাড়া এলাকার প্রবীণ কৃষক আবদুল আলিম ও জাফর আলম অতীত দিনের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ভোরের আলো ফোঁটার আগেই গরু নিয়ে মাঠে যেতাম। গরু ছিল শুধু পশু নয়, পরিবারের মতো। এখন সব যন্ত্রে হয়, কিন্তু সেই মাটির টান আর গরুর সঙ্গে যে হৃদয়ের সম্পর্ক ছিল, তা আর ফিরে আসে না।
উখিয়াস্থ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো:শাহজাহান ও আবু তাহের বলেন, গরু-মহিষ দিয়ে হালচাষ পরিবেশবান্ধব হলেও সময়ের দাবি মেটাতে আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার জরুরি। কৃষিকে টেকসই ও লাভজনক করতে প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতেই হবে।
তিনি আরও বলেন, এখন আর আগের মতো গরু দিয়ে হালচাষ দেখা যায় না। দু-একজন ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখলেও, সময়ের পরিবর্তনে সেটিও হয়ত একদিন ইতিহাসে পরিণত হবে।
বাংলার মাটির গন্ধমাখা কৃষি ঐতিহ্য হারিয়ে গেলেও, কিছু হৃদয়ে আজও বেঁচে আছে সেই লাঙল-জোয়ালের স্মৃতি। হয়ত সময়ের বিবর্তনে লাঙ্গল-জোয়ালের ব্যবহার বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বাঙালি মানসে এই রেশ রয়ে যাবেই,এটাই অনেকের ধারণা।###

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট